Friday, November 1, 2024

Moulvibazar and Habiganj Adventure | মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ অভিযান

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা আর হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা - এ দুই স্থানে অবস্থিত ২ টি জাতীয় উদ্যান বা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। এদের অবস্থান সিলেট বিভাগে যা - বাংলাদেশের চায়ের রাজধানী হিসাবে সুপরিচিত। পাহাড়ের ঢালে চা বাগানের অপূর্ব দৃশ্য ছাড়াও এর আশেপাশে রয়েছে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, রাবার বাগান, সিতেশ বাবুর চিড়িয়াখানা, মাধবপুর লেক সহ আরো বেশকিছু দর্শনীয় স্থান। 


ঢাকা থেকে সড়ক এবং রেলপথে সরাসরি যাওয়া সম্ভব। উভয় পথেই সময় লাগে প্রায় ৫ ঘন্টা। এ রুটে হানিফ পরিবহন, এনা পরিবহন, শ্যামলী পরিবহনসহ বেশ কিছু অপারেটরের বাস চলাচল করে। বাসগুলো সায়েদাবাদ এবং ফকিরাপুর থেকে ছেড়ে যায়। অন্যদিকে পারাবত এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেস এবং উপবন এক্সপ্রেস নামক ট্রেনগুলো সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। 

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান

বছরের পর বছর যায়, তবু এ স্থানের জনপ্রিয়তা বাড়ে বৈ কমে না। সেই কবে 'অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ইন এইটি ডেইস' এর ফিলিয়াস ফগ এসে পৌঁছেছিলেন লাউয়াছড়ার অভ্যন্তরের রেলপথে, আজও লোকে সেখানে বেড়াতে যায়। প্রায় সারা বছরই এখানে পর্যটকদের ভীড় লেগে থাকে। বিরল প্রজাতির পাখি, বাঁদর, হরিণ প্রভৃতি প্রাণীদের বাসস্থান এই উদ্যান। এদেরকে এক নজর দেখার পাশাপাশি হাইকিং ও ট্রেকিংয়ের জন্যও এ বন বেশ উপযোগী। তবে সেসময় স্থানীয় একজন গাইড সঙ্গে রাখলে ভালো হয়। 


শীতকালে শিশিরের অন্য এক জাদু ছড়িয়ে পড়ে এই রেইনফরেস্টে। হালকা কাদামাখা পথ দিয়ে একা একা হেঁটে যেতেও মন ছুঁয়ে যাবে প্রশান্তি। নাগরিক কোলাহল এড়িয়ে কিছুক্ষণের এই নির্জনতা সঙ্গী হবে হয়তো কাছেই ডেকে ওঠা একটা পাখির। প্রকৃতি ধরা দেবে চোখের সীমানায়। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান মৌলভীবাজার শহর থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং বাস বা ট্রেনের মাধ্যমে এখানে যাওয়া সম্ভব। 

মাধবপুর লেক

কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত এই লেকটি। জলপদ্মসহ বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদে পরিপূর্ণ এই স্থানটিতে বহু ধরনের পাখিদেরও আনাগোনা রয়েছে। একেক ঋতুতে মাধবপুর লেকের যেন একেক রূপ। কারও চোখে হয়তোবা তা ধরা দিতে পারে জল-উপকথার বিচিত্র প্রাণীর আকৃতিতে।


শীতকালে মাধবপুর লেকের মোহনীয় চেহারা ধরা দেয় পর্যটকদের কাছে। এ সময়ে সাদা পেটের বগলা পাখিও দেখা যায়। শ্রীমঙ্গল থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেই স্বপ্নালু এই হ্রদের দেখা মিলবে।

নীলকণ্ঠ টি-কেবিনের বিখ্যাত সাত রং চা

শুরুরদিকে শুধু একজায়গায় থাকলেও এখন বেশকিছু যায়গায় রয়েছে এই সাত রং চা এর উপস্থিতি, তবে মূল সাতরঙা চা বলতে নীলকন্ঠ কেবিনের চা কেই বোঝানো হয়। শ্রীমঙ্গলে বধ্যভূমি, বিডিআর ক্যাম্প ও কালীঘাট এই তিন যায়গায়  নীলকণ্ঠ চা কেবিন আছে তিনটি। সিলেটের গন্ডি ছাড়িয়ে  এখন রাজধানীর  ঢাকার অন্যতম ব্যাস্ত এলাকা খিলগাও এর  তালতলাতেও এই সাত রঙের চা পাওয়া যায়। চায়ের  লম্বা গ্লাসে এক স্তরের ওপর ভেসে থাকে আরেক স্তর। প্রতিটি স্তরে ভিন্ন রঙ। ঠিক এক গ্লাসে সাত রঙের সাত স্বাদের চা। প্রতিটা রঙ ভিন্ন। একটি অপরটির সঙ্গে মিশে না। প্রতিটা রঙের স্বাদও আলাদা। এর স্বাদ নিয়ে কিঞ্চিৎ বিতর্ক রয়েছে তবে স্বাদ যতটা না ভাল তারচেয়েও ভাল হচ্ছে এর সৌন্দর্যটা । সাত রঙের চা বলে খ্যাত হলেও বর্তমানে চা পাবেন আট রঙের। তবে আট রঙ বলালে আসলে ভুল হয়ে যায় আটটি ভিন্ন স্তরের চা। রঙ থাকে  ২/৩টি। বিভিন্ন ধরণের মসলার ব্যবহারের তারতম্য, পানির ঘনত্বের চমৎকার বিন্যাস চায়ের এই স্তর সৃষ্টি করে।

সিতেশ বাবুর চিড়িয়াখানা

সিতেশ বাবুর চিড়িয়াখানা (Shitesh Babu’s Zoo) মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার একটি সমৃদ্ধ ও একমাত্র চিড়িয়াখানা (যেটি বর্তমানে বন্য প্রানী সেবা ফাউন্ডেশন)। চিড়িয়াখানটি শ্রীমঙ্গল শহরের অদূরে হাইল হাওরের কাছে অবস্থিত। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় ১ কি.মি পশ্চিমে একশত আশি একর জায়গাজুড়ে সিতেশ বাবুর গড়ে তুলেন। বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গলে এই চিড়িয়াখানাটি স্থাপিত হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পর্যটকসহ বিদেশি অনেক পর্যটকও প্রতিদিন ভিড় করেন এ চিড়িয়াখানায়। অত্র এলাকার মানুষের শিক্ষার সহায়ক একটি ক্ষেত্রও বলা যায় এই চিড়িয়াখানাকে।

সিতেশ বাবুর পরিবার দীর্ঘ ৪৭ বছর ধরে বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রাণি সংগ্রহের পর বর্তমানে এটি একটি পরিপূর্ণ চিড়িয়াখানায় পরিণত হয়েছে। চিড়িয়াখানায় সংরক্ষিত বিভিন্ন ধরনের জীব জন্তুর মধ্যে রয়েছে: দেশের একমাত্র বিলুপ্ত প্রায় সাদা বাঘ, বিরল প্রজাতির সোনালী বাঘ, হিংস্র মেছোবাঘ, সোনালী হনুমান, সজারু, চারপাশে আতপ চালে গন্ধ ছড়ানো গন্ধগোকুল,নিশি বক, পাহাড়ি বক, সোনালী কচ্ছপ, বন মোরগ, ডাহুক, জংলী রাজহাস, সবুজ ঘুঘু, ধনেশ, তিলা ঘুঘু, রাজ সরলী, চা পাখি, অজগর, তোতা,ময়না, কচ্চপ, ভল্লুক ও অসংখ্য বিরল প্রজাতির প্রাণী।


এছাড়াও আছে লজ্জাবতী বানর, লাল উড়ন্ত কাঠবিড়ালি, হনুমান, মায়া হরিণসহ প্রায় দেড়শ প্রজাতির জীবজন্তু। রয়েছে কালো-হলুদ ডোরাকাটা ত্রিভুজাকৃতির বিলুপ্তপ্রায় শঙ্খিনীণি, আছে হিমালয়ান সিভিটকেট, সোনালি কচুয়া, বন্য খরগোশ,মথুরা, বন্য রাজহাঁস, লেঞ্জা, ধলা বালিহাঁস, প্যারিহাঁস,চিত্রা হরিণ, কোয়েল, লাভবার্ড, কাসে-চড়া,বনরুই, বিভিন্ন রঙের খরগোশ, সোনালি খাটাশ, বড় গুইসাপ, ধনেশ, হিমালয়ান টিয়া, ময়না, ময়ূর, কালিম, বাজিরিক, শঙ্খ চিল, হরিয়াল প্রভৃতিও।

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের একটি প্রাকৃতিক উদ্যান। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ/সংশোধন আইনের বলে ২৪৩ হেক্টর এলাকা নিয়ে ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে “সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান”(Satchari Jatio Uddan) প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই উদ্যানে সাতটি পাহাড়ি ছড়া আছে, সেই থেকে এর নামকরণ সাতছড়ি (অর্থ: সাতটি ছড়াবিশিষ্ট)। সাতছড়ির আগের নাম ছিলো “রঘুনন্দন হিল রিজার্ভ ফরেস্ট”।


জাতীয় উদ্যানটি কয়েকটি চা বাগান, গ্রাম, শহর এবং চাষাবাদকৃত জমি দ্বারা নিবিড়ভাবে বেষ্টিত। সাতছড়ি উদ্যানের কাছাকাছি ৯টি চা বাগান অবস্থিত। উদ্যানের পশ্চিম দিকে সাতছড়ি চা বাগান এবং পূর্ব দিকে চাকলাপুঞ্জি চা বাগান অবস্থিত। টিপরাপাড়া নামে একটি গ্রাম উদ্যানটির ভেতরে অবস্থিত। যেখানে ২৪টি আদিবাসী উপজাতি পরিবার বসবাস করে। আশপাশের চৌদ্দটি গ্রামের মানুষ, বিশেষ করে চা বাগানের শ্রমিক ও বনের মধ্যে বসবাসকারীরা বিভিন্নভাবে বনজ সম্পদের ওপর নির্ভরশীল।


সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে রয়েছে ১৪৫ প্রজাতির গাছপালা ছাড়াও ১৯৭ প্রজাতির জীব। যার মধ্যে ১৪৯ প্রজাতির পাখি, ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ৬ প্রজাতির উভচর প্রাণী। সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের উল্লুকগুলোর এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফালাফি এবং পোকামাকড়ের বিচিত্র ধরনের ঝিঁঝিঁ শব্দ পর্যটকদের মধ্যে দারুণ আনন্দ দেয়।


এ বনের ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে উল্লুক, মেছোবাঘ, শুকুর, সাপ, মুখপোড়া হনুমান, চশমা হনুমান, লজ্জাবতী বানর, প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। ১৪৯ প্রজাতির পাখির মধ্যে ধনেশ, লাল মাথা ট্রগন এবং বিরল উদ্ভিদের মধ্যে বিষলতা, পিতরাজ, কানাইডিঙ্গা, আগর ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ২০ প্রজাতির বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হতে চলছে। বিলুপ্ত প্রায় এসব প্রজাতির মধ্যে রয়েছে চিতা বাঘ, মেছো বাঘ, লজ্জাবতি বানর, মায়া হরিণ, উল্লুক, ময়না পাখি, ঘুঘু পাখি, টিয়া পাখি, ঈগল পাখিসহ উল্লেখযোগ্য বন্যপ্রাণী কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে।

কালারডুবা হাওড় / নৌকা ঘাট 

স্নিগ্ধ বাতাসে বিস্তীর্ণ হাওড়ের বিশাল জলরাশির পাশে প্রিয়জনদের সঙ্গে বেড়াতে হাজারো মানুষের ভিড় করছেন হবিগঞ্জের কালারডুবা হাওরের পাড়ে। বর্ষা মৌসুমের পড়ন্ত বিকেলে দর্শনার্থীদের আগ্রহ একটু বেশি। তবে, এ স্থানে একটি পরিকল্পিত বিনোদনকেন্দ্র নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের। কেউ চড়েছেন নৌকায়, কেউবা পাড়ে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছেন। পড়ন্ত বিকেলে দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখর কালারডুবা হাওড় এলাকা। বর্ষা মৌসুমে হবিগঞ্জের সদর উপজেলার কালারডুবা হাওড় এলাকায় এমনই ভিড় লেগে থাকে। জেলা শহরের কাছাকাছি কোন বিনোদনকেন্দ্র না থাকায় বিকেলে হাজারো মানুষ জড়ো হন হাওড়পাড়ে। দর্শনার্থীদের বসে খাওয়ার জন্য এখানে তৈরি করা হয়েছে ছোট ছোট ঘর। পানি ভেসে বেড়ানোর জন্য রয়েছে নৌকা।


আজ এ পর্যন্তই, সবাই পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখবেন। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ !


Adventure of Rajshahi | রাজশাহী অভিযান

পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহর রাজশাহী। আম ও রেশমী বস্ত্রের জন্যে বিখ্যাত রাজশাহী জেলা রাজশাহী বিভাগের সবচেয়ে বড় শহর। প্রাচীন বাংলার ইতিহাস সমৃদ্ধ এই রাজশাহী শহরে রয়েছে বিখ্যাত মসজিদ, মন্দির ও ঐতিহাসিক স্থাপনা। পদ্মার তীরের এই শহরের পর্যটকদের জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থানের মধ্যে রয়েছে বাঘা মসজিদ, পুঠিয়া রাজবাড়ি, পদ্মার পাড়, বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী কলেজ ইত্যাদি।

পুঠিয়া রাজবাড়ী (Puthia Rajbari) রাজশাহীতে অবস্থিত নজরকাড়া স্থাপত্যের একটি অনন্য নিদর্শন। রাজশাহী বিভাগীয় শহর হতে ৩০ কিলোমিটার এবং রাজশাহী-নাটোর মহসড়ক থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে পুঠিয়া রাজবাড়ীর অবস্থান। পুঠিয়া বহুকক্ষ বিশিষ্ট দ্বিতল পুঠিয়া রাজবাড়ীতে প্রবেশের জন্য উত্তর দিকে একটি সিংহ দরজা রয়েছে। জমিদার বা রাজারা এখান থেকে তাদের রাজ কর্ম পরিচালনা করতেন। ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যে উনবিংশ শতাব্দীতে পুঠিয়া রাজবাড়ি নির্মিত হয়। 

রাজশাহী শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর (Varendra Research Museum) হল বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। আর প্রত্নতত্ত্ব সংগ্রহের তালিকায় বরেন্দ্র জাদুঘর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম।১৯১০ সালে নাটোরের দিঘাপাতিয়ার জমিদার শরৎ কুমার রায়, আইনজীবী অক্ষয় কুমার মৈত্র এবং রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক রামপ্রসাদ চন্দ্র বাংলার ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের জন্য বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতি গঠন করে বিভিন্ন স্থানে অনুসন্ধান চালিয়ে ৩২টি দুষ্প্রাপ্য নিদর্শন সংগ্রহ করেন। পরবর্তীতে ১৯১৩ সালে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর নিজস্ব ভবনে যাত্রা শুরু করে।

রাজশাহী শহরের দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় স্থানগুলোর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) অন্যতম। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সবুজ প্রকৃতিকে উপভোগ করতে এখানে প্রতিদিন বহু স্থানীয় পর্যটক আসেন। মূলত, ক্যাম্পাসটি একটি বৃহৎ বাগানের মতো। বাগানটির ভেতরে আছে বহু প্রজাতির গাছ। এর মধ্যে প্যারিস রোডের মনোমুগ্ধকর ও আকাশচুম্বী গগন শিরিশ গাছ পর্যটকদের খুব কাছে টানে। এ ছাড়া, আম বাগান তো আছেই।


রাজশাহী এসে প্যারিস রোড ঘুরে যাননি এমন মানুষ খুব কমই আছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর রাস্তাগুলোর একটি এই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড। এর চারিদিকের অপরূপ লাবণ্যতা আপনাকে এনে দিবে অন্যরকম প্রশান্তি। 

নগরীর  বুলনপুর  থেকে  বড়কুঠি ও পঞ্চবটি হয়ে সাতবাড়িয়া। দীর্ঘ প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পদ্মার পাড় এখন রাজশাহী বাসীর জন্য বিনোদনের সেরা ঠিকানা। পদ্মার ধার ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে রাস্তার পথ। বর্তমানে এ সড়ক দিয়ে সহজেই বিনোদন পিপাসুরা হেঁটে পদ্মার অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে পারে। গ্রীষ্ম, শীত, বর্ষা কিংবা শরত, সব ঋতুতেই পদ্মা নদীকে ঘিরে মানুষের আনাগোনা। গ্রীষ্মে শুকিয়ে কাঠ পদ্মা আর বর্ষায় জলে টইটম্বুর সব সময় মানুষকে কাছে টানে। নিয়ে যায় এর নৈসর্গিকতায়। আর উৎসব হলে তো কথাই নেই। প্রতিটি উৎসবে বিনোদন পিয়াসীদের কাছে সেরা ঘোরাঘুরির স্পট হিসেবে প্রথম পছন্দ পদ্মা নদী। 

মুক্তমঞ্চ হলো পদ্মার তীর বেয়ে ঘেঁষে ওঠা আরেকটি উন্মুক্ত বিনোদোন কেন্দ্র, যা ২০১৩ সালে স্থাপিত হয়েছে। এখানে রয়েছে মুক্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সুবিধা। তাছাড়া প্রকৃতির মুক্ত হাওয়া খেতে লোকজনের সমাগম লেগেই থাকে এখানে।

Thursday, October 31, 2024

The Adventure of Chandpur | চাঁদপুর ভ্রমণ

নদীর টাটকা ইলিশের স্বাদ নিতে অথবা একটা দিন নিজেদের মতো করে কাটাতে চাইলে চলে যেতে পারেন ঢাকা থেকে মাত্র চার ঘণ্টা দূরত্বে অবস্থিত চাঁদপুরে।

পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত চাঁদপুর জেলা। চাঁদপুর যাবেন আর বড়স্টেশন মোলহেড বা তিন নদীর মোহনায় ঘুরতে যাবেন না, তা হতেই পারে না! এ ছাড়াও আছে অঙ্গীকার স্মৃতিসৌধ, রক্তধারা স্মৃতিসৌধ, ইলিশ চত্বর, ডিসির বাংলো।

যদি হাতে সময় থাকে ঘুরে আসতে পারেন 'মিনি কক্সবাজার' খ্যাত হাইমচর থেকে। বর্তমানে পর্যটকদের আনাগোনায় এই 'ছোট্ট কক্সবাজার' বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বড়স্টেশনের কাছ থেকে ট্রলারে জনপ্রতি ৮০-১০০ টাকা ভাড়ায় সেখানে যেতে পারবেন। এ ছাড়াও সায়েদাবাদ থেকে বাসযোগেও চাঁদপুর যেতে পারবেন। কমলাপুর থেকে ট্রেনে লাকসাম নেমে সেখান থেকেও চাঁদপুরে যাওয়া যায়। তবে সবাই মিলে একদিনের ট্যুরে যেতে লঞ্চে যাওয়াই বেশি মজার। নদীর বুকে ভেসে ভেসে ইলিশের শহর চাঁদপুরে যে কখন পৌঁছে যাবেন, টেরই পাবেন না।

চাঁদপুরের বড়স্টেশনের কাছেই আছে ইলিশ বাজার। তাই বিকেলের সময়টা নদী মোহনায় কাটিয়ে সন্ধ্যায় চলে যান ইলিশ বাজারে। ইলিশ খাওয়ার পাশাপাশি পছন্দমতো রূপালি ইলিশ কিনে সঙ্গে নিয়ে আসার সুব্যবস্থাও আছে সেখানে।

চাঁদপুরের বড়স্টেশনের কাছেই আছে ইলিশ বাজার। তাই বিকেলের সময়টা নদী মোহনায় কাটিয়ে সন্ধ্যায় চলে যান ইলিশ বাজারে। ইলিশ খাওয়ার পাশাপাশি পছন্দমতো রূপালি ইলিশ কিনে সঙ্গে নিয়ে আসার সুব্যবস্থাও আছে সেখানে।


মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্র (Mohanpur Parjatan Centre) যার পূর্ণ নাম মোহনপুর পর্যটন লিমিটেড, বাংলাদেশের চাদপুর জেলার মতলব উত্তর, মোহনপুরে অবস্থিত একটি অন্যতম আকর্ষণীয় একটি পর্যটন কেন্দ্র। প্রতিদিন সূর্যের নতুন রোদ, এক একটি নতুন স্বপ্নের সুচনা জাগায় এই পর্যটন কেন্দ্র। বালুকাময় নদী তীরে দাঁড়িয়ে সমুদ্র সৈকতের আবহ, তপ্ত দুপুরে খোলা আকাশের নিচে নদীর সূর্যের ঝলকানি, আর সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার অপূর্ব সুযোগ- এসবই উপভোগ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে চাঁদপুরের মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রে। এ যেন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের একখণ্ড প্রতিচ্ছবি। চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলায় মেঘনা নদী তীরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের আদলে গড়ে উঠা এই পর্যটন কেন্দ্রে প্রতিদিনই ভিড় করছেন ভ্রমণপিয়াসী হাজারো দর্শনার্থী। মোহনপুর গ্রামের লঞ্চঘাট এলাকায় ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত মিঠাপানির এই সৈকত এরই মধ্যে ‘মিনি কক্সবাজার’ হিসেবে সবার কাছে সমাদৃত হয়েছে।

The Adventure of Bogura | বগুড়া অভিযান

করতোয়া নদীর কোল ঘেঁষে সুফি, লালন মারাঠি সংস্কৃতি সমৃদ্ধ বগুড়া জেলাকে বলা হয় উত্তর বঙ্গের প্রবেশদ্বার। পর্যটন সমৃদ্ধ বগুড়া জেলায় বিখ্যাত মহাস্থানগড় অবস্থিত। বগুড়া জেলার দর্শনীয় ভ্রমণ স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভাসু বিহার, বেহুলা লখিন্দের বাসর ঘর, গবিন্দ ভিটা, নওয়াব প্যালেস, খেরুয়া মসজিদ, পশুরামের প্রাসাদ ইত্যাদি।

বগুড়ায় আসার সঙ্গেই আপনাকে স্বাগত জানাবে মহস্থানগড়। বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন পর্যটন কেন্দ্র এটি। বগুড়ার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচিত এটি। বগুড়ার প্রাণকেন্দ্র সাত মাথা থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মহাস্থানগড়। সাতমাথা থেকে অটোরিকশায় করে জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়ায় ঘুরে আসতে পারেন স্থানটি।


মহাস্থানগড়ে রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। এরমধ্যে গোকূল মেধ বা বেহুলার বাসর ঘর সর্বাধিক পরিচিত। এ ছাড়াও রয়েছে শাহ সুলতানের মাজার, খোদার পাথর ভিটা, জিয়ৎ কুণ্ড, ভাসু বিহার, গোবিন্দ ভিটা, প্রত্নতাত্মিক জাদুঘর, শীলাদেবীর ঘাট, মানকালীর কুণ্ড, পশুরামের প্রাসাদ মশলা গবেষণাকেন্দ্র। এসব জায়গা দেখতে হলে আপনাকে দিনের অর্ধেক সময় হাতে নিয়ে বের হতে হবে।

মহাস্থানগড়ে রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। এরমধ্যে গোকূল মেধ বা বেহুলার বাসর ঘর সর্বাধিক পরিচিত। এ ছাড়াও রয়েছে শাহ সুলতানের মাজার, খোদার পাথর ভিটা, জিয়ৎ কুণ্ড, ভাসু বিহার, গোবিন্দ ভিটা, প্রত্নতাত্মিক জাদুঘর, শীলাদেবীর ঘাট, মানকালীর কুণ্ড, পশুরামের প্রাসাদ মশলা গবেষণাকেন্দ্র। এসব জায়গা দেখতে হলে আপনাকে দিনের অর্ধেক সময় হাতে নিয়ে বের হতে হবে।

মহাস্থানগড়ে রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। এরমধ্যে গোকূল মেধ বা বেহুলার বাসর ঘর সর্বাধিক পরিচিত। এ ছাড়াও রয়েছে শাহ সুলতানের মাজার, খোদার পাথর ভিটা, জিয়ৎ কুণ্ড, ভাসু বিহার, গোবিন্দ ভিটা, প্রত্নতাত্মিক জাদুঘর, শীলাদেবীর ঘাট, মানকালীর কুণ্ড, পশুরামের প্রাসাদ মশলা গবেষণাকেন্দ্র। এসব জায়গা দেখতে হলে আপনাকে দিনের অর্ধেক সময় হাতে নিয়ে বের হতে হবে।

Brahmanbaria Adventure | ব্রাহ্মণবাড়িয়া অভিযান

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিল্প-সাহিত্য ও শিক্ষা-সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহি সুপ্রাচীন একটি শহর। তিতাস নদীর অববাহিকায় অবস্থিত এই জেলা চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত। ৯টি উপজেলা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা গঠিত। ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে ১৯৮৪ সালে একটি জেলা হিসাবে ঘোষণা করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের সাথে বিজয়নগর উপজেলার সরাসারি কোনো সংযোগ সড়ক নেই। প্রায় ৩৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জেলার আখাউড়া অথবা সরাইল হয়ে জেলা সদরে আসতে হয়। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের শিরাইলকান্দি থেকে বিজয়নগরের পত্তন ইউনিয়নের  সীমানা পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। সড়কটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৩৫ কোটি টাকা। বর্তমানে সড়কটি চালু করে দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সড়কটির নামকরণ করা হয়েছে ‘শেখ হাসিনা সড়ক’।



নদীর পাশেই আবিরাম সুন্দর পরিবেশে, নবীনগরে স্থাপিত আহমেদ গার্ডেন সিটি ও হাসপাতাল। নিরিবিলি পরিবেশে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য চমৎকার পরিবেশ।