Showing posts with label উপলদ্ধি. Show all posts
Showing posts with label উপলদ্ধি. Show all posts

Saturday, June 6, 2020

সময় : সুসময় - দুঃসময় ও অসময় (পর্ব ২)

সরকারি চাকরির নিয়োগ বেশ দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। তাই শুধু একটি পরীক্ষা দিয়ে বসে থাকলে চলবে না। পাশাপাশি অন্যান্য চাকরির জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। মাস্টার্স চলাকালীন অবস্থায় বেশ কয়েকটি সরকারি ব্যাংকে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইবা পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ হয়েছিল। যদিও চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হইনি, তার পরেও হাল ছেড়ে দেইনি। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম।

Friday, June 5, 2020

সময় : সুসময় - দুঃসময় ও অসময় (পর্ব ১)

সময় সাধারণত দুই প্রকারভালো সময় আর খারাপ সময় এছাড়া অন্য যা আছে সেটি হল  অসময় / ভুল সময় ভালো সময় রাস্তার ফকিরকেও রাজা বানিয়ে দেয়, আর খারাপ সময়ে ঘটে ঠিক তার উল্টোটা কিন্তু এই দুই প্রকার সময়ের মধ্যে এক অদ্ভুত মেলবন্ধন রয়েছে কারো জন্য ভালো সময় তো অন্য কারো জন্য সেটি খারাপ সময় আর সে জন্যই বলা হয়ে থাকে - কারো পৌষ মাস তো কারো সর্বনাশ কখনো কখনো ভুল সময়ে সঠিক কোন ঘটনা ঘটে যায়, আবার কখনো সঠিক সময়ে ভুল কিছু ঘটে

Friday, May 18, 2018

প্রশ্ন

প্রিয়  'তুমি' ,
আমি জানি যে এই আমি তোমার অচেনা কেউ নই , তবে অনেকাংশেই অজানা।  আর এই চিঠিটা পড়ার পর আবারও ভেবে নিও। আরও একটিবার ভেবে দেখ, আমায় চেনো ? জানো ? ভালবাসো ? কেন ? উত্তর আমাকে দিতে হবে না , কারণ আমি তা জানি। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকেই প্রশ্ন করে দেখ , উত্তর পেয়েছো ? আমায় তুমি কতটা জানো জানিনা , তবে নিজেকে কতটা জানো ? Socrates বলেছিলেন  - “To know thyself is the beginning of wisdom.”

তুমি কি সত্যিই জানো আমি কে ?  প্রশ্ন রইল তোমার কাছে। চেয়ে দেখো তোমার চারিদিকে কত আলো , কখনও হাতের মুঠোয় ধরার চেষ্টা করেছো ? পারবে না। কিন্তু চোখ মেলে তাকিয়ে দেখো সেই আলো তোমাকে , তোমার চারপাশকে উদ্ভাসিত করেছে। আলোকে নিজের মুঠোয় বন্দি করার চেষ্টা না করে নিজেকে আলোর কাছে সমর্পিত কর। নিজেকে প্রশ্ন করো , স্বার্থপরের মতো মুষ্ঠিবদ্ধ করেছো নাকি ত্যাগের মহিমায় নিজেকে উদ্ভাসিত করেছো ? এই জ্ঞানকে তুমি কি গ্রহণ করতে পারবে ? তুমি কি প্রস্তুত আছো ?

তুমি কি সত্যিই নিজেকে জানো ? যদি জেনে থাকো তাহলে বুঝতে পারবে তোমার আর আমার সম্পর্ক শুধু এই মাটির তৈরি দেহের নয় , যা ক্ষণস্থায়ী। বরং শরীর নামক এই খোলসটিই আমার থেকে তোমাকে আলাদা করেছে। যদি পারো শারীরিক এই বাধাকে তুচ্ছ করে দেখ তুমি আর আমি একই , অভিন্ন। আমার থেকে তোমাকে পৃথক করতে পারবে না।

I am all that has been, that is and that will be; No mortal hath ever me unveiled. - Isis (Egyptian goddess)

অনুরূপ কথা শ্রীকৃষ্ণও বলেছিলেন ভগবত গীতায় ,  "আমিই শ্রীকৃষ্ণ আমিই অর্জুন , এই জগতে এমন কিছু নেই যা আমি নই" আরও বলেছিলেন , "হে অর্জুন আমিই পরমাত্মা, আমার প্রতি সমর্পনই পরমআত্মার প্রতি সমর্পন।"

 If I'm the god for someone then I must be the devil for someone else. When you know who you are, you know your purposes. 

তুমি কি সত্যিই জানো আমি কে ?  প্রশ্ন রইল তোমার কাছে। প্রতিনিয়ত আমি নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করে চলেছি। গতকালকের আমি আর আজকের আমি - এ দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য করে চলেছি নিরন্তর। আগামী দিনেও এই আমি'ই হয়ত আজকের আমি'র সাথে তুলনা করবো। এ যেন নিজের সাথে নিজেরই দ্বন্দ্ব ! কে বেশি জ্ঞানী ? কে বেশি শক্তিশালী ? কে - ই  বা অধিক পূর্ণতা অর্জন করেছে ? এ যেন একে অন্যের উপর আধিপত্য বিস্তারের লড়াই কিন্তু অন্য কেউ নয় - সে তো আমি'ই। অন্য কারও সাথে নয় বরং নিজেকেই নিজের সাথে তুলনা করছি , কারণ আমার মত আর কেউই নেই। 

Future - every time you look at it, it changes. Change is the only constant. If you can't change yourself with time the time will change everything against you. আজকের এই আমি - সে তো গতকালের আমি'রই পরিবর্তিত রূপ। কিন্তু এই রূপান্তর শুধু অস্তিত্বের প্রয়োজনে। 

“Yesterday is history, tomorrow is a mystery, today is a gift of God, which is why we call it the present.”    ― Bil Keane

তুমি কি বাস্তবিক অর্থেই নিজেকে জানো ? তোমার অস্তিত্ব - সে তো আমি।  গতকাল, আজ আর আগামী দিনের আমি'র মধ্যে একটি জিনিসই ধ্রুব , আর তা হলো অস্তিত্ব। আর এই অস্তিত্বে মিশে আছো তুমি। আমি ছাড়া যেমন তোমার কোনো অস্তিত্ব নেই , তেমনি তুমি বিহীন আমি নিরর্থক। 

“Sometimes the questions are complicated and the answers are simple.”       ― Dr. Seuss

আমার দুঃখ-সুখ , বেদনা-বিরহ সবকিছুই তোমার সাথে জড়িত। তুমি বিশুদ্ধ কিন্তু আমি নই , তবুও যে তোমাকেই চাই। আমি জানি , সন্ন্যাস আমার জন্য অনিবার্য তাই সংসারের মোহ নেই। পিছুটানে তোমায় বাঁধবো না কারণ তোমায় ভালবাসি তাই প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব করি না। 

Sometimes the truth is not good enough and sometimes the ethics become epic. Sometimes the wrong things can happen at the right time. I don't try to judge people rather I love them, learn from them. Judgement is not always necessary and you may not get enough time for that. In fact you may end up getting wrong conclusion. I'm not afraid of dying but I'm afraid of not living myself.

Don't worry ! Someone, somewhere is made for you. God sends an angel to each and everyone's life. To set you free and fulfill all your wishes. If you don't find one then be the one for yourself and other's as well. Maybe you are the angel for someone else, who knows? The person who's wish is never fulfilled may help to fulfill other's wish. I'll be there for you and help to fulfill all your wishes.

তুমি কি আমার বাস্তবিক রূপ জানো ? প্রশ্ন রইল তোমার কাছে। আমি যা লিখেছি তার কতটুকু তুমি বুঝেছো জানিনা। হয়তো কিছুই বুঝোনি কারণ তুমি বাহ্যিক রূপটাই দেখছো কিন্তু আমি তার কথা বলিনি , তুমি শরীরটাকেই বুঝেছো আর আমি আত্মার কথা লিখেছি। 

যাইহোক, সর্বদা তোমার কল্যাণ কামনা করি। নিজের প্রতি যত্ন নিও , কারণ তোমার অযত্ন আর অবহেলায় আমার কষ্টটাই বেশি হয়। তোমার সুখে থাকাটাই যে আমার কাছে পরম আনন্দের বিষয়।

ইতি ,
'আমি'

Tuesday, August 15, 2017

শরীর ও মন এবং সমাজ ও মূল্যবোধ

শরীর ও মন - এর মধ্যে একটি বস্তুগত আর অপরটি অবস্তুগত, তবে কাল্পনিক নয়।  সহজভাবে বলতে গেলে একটির Physical Existence আছে আর অপরটির রয়েছে Logical Existence।  তবে যারা এই Logic অর্থাৎ এই যুক্তি মানতে নারাজ তাদের জন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা যায় - "শরীর এবং মন এক ও অভিন্ন"। সাইকোলজি নিয়ে যখন পড়ালেখা করছিলাম তখন দেখলাম যে এর শুরুতেই শিক্ষার্থীদের মনে এই ধারণাটি গেঁথে দেয়া হয়। তবে দর্শনশাস্ত্র অনুযায়ী মানুষের মনের আলাদা পরিচয় আছে।

শরীরের যেমন চাহিদা আছে তেমনি মনেরও কিছু চাহিদা আছে। মনের চাহিদার মধ্যে অন্যতম হলঃ স্বাধীনতা, বিকাশ, শিক্ষা, ভালবাসা, সম্পর্ক, চিত্ত-বিনোদন, ইত্যাদি। আর শরীরের চাহিদার মধ্যে প্রধানতম হলঃ স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, ক্ষুধা, যৌনতা, প্রবৃত্তি, ইত্যাদি। শরীর যেমন তার চাহিদা পূরণের জন্য তাগিদ দেয় তেমনি মনও তার চাহিদা পূরণ করতে চায়। মানুষের শরীরের মৃত্যুর সাথে সাথে মনেরও মৃত্যু ঘটে। শরীরের মৃত্যুতে শরীরের চাহিদার সমাপ্তি হয়, সেই সাথে হয় মনের মুক্তি। আর এভাবেই হয় মানুষের জীবনের পরিসমাপ্তি। অর্থাৎ যার Physical Existence থাকে না, তার কোন Logical Existence থাকবে না - এটাই স্বাভাবিক। কিন্ত যার Logical Existence নেই তার তো Physical Existence থাকতেও পারে। অর্থাৎ, মনের মৃত্যু হলেও শরীর বেঁচে থাকতে পারে। 

যখন মানুষের মনের মৃত্যু ঘটে কিন্তু শরীর জীবিত থাকে তখন মনের চাহিদা গুলোরও মৃত্যু হয়, কিন্তু শরীরের চাহিদার সমাপ্তি হয় না। মনের এই মৃত্যুকে অনেকে আবার অনেক ভাবে প্রকাশ করে থাকে যেমনঃ মানবিকতার মৃত্যু, মনুষ্যত্বের মৃত্যু, মানুষিকতার মৃত্যু কিংবা মানবতার অপমৃত্যু, ইত্যাদি। মৃত মনের কিন্তু জীবিত শরীরের সেই মানুষটি একজন মনুষত্বহীন মানুষ হয়ে বেঁচে থাকে তার শরীরের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। মন নেই, তবে শরীর যখন আছে তার চাহিদা তো থাকবেই আর শরীরের চাহিদাই তখন মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। শরীর তার চাহিদা পূরণে আরো হিংস্র হয়ে উঠে, তখন সমাজ, ধর্ম, শিক্ষা - এ সব কিছুই তুচ্ছ প্রতীয়মান হয়। 

মানুষের মৃত্যু বা তার শরীরের মৃত্যু আপনি হয়ত অনেক দেখে থাকবেন, হয়তোবা দুঃখও প্রকাশ করে থাকবেন কিন্তু মনের মৃত্যু হলে আপনি বা আমরা কি করি ? মানুষের মনের এই মৃত্যু কি আপনি কখনও দেখেছেন নাকি উপলদ্ধি করেছেন ?  আপনার চারপাশে তাকিয়ে দেখুন, সমাজের বাস্তবিক রূপটা বুঝতে চেষ্টা করুন। মূল্যবোধের অবক্ষয়, নীতিহীনতা, সীমাহীন দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, কুসংস্কার, শিক্ষার অভাব, আইনের লঙ্ঘন, উশৃঙ্খলতা, স্বার্থপরতা - এই সব কি আপনি দেখতে পাচ্ছেন ?  তাহলেই মানবতার মৃত্যু আপনি উপলদ্ধি করতে পারবেন। 

শরীর যখন অসুস্থ হয় তখন সুস্থতা লাভের জন্য আমরা কত কিছুই না করি। শরীরের মৃত্যু এড়াতে আমাদের প্রচেষ্টার অন্ত থাকে না, কিন্তু মনের অসুস্থতা বা মনের মৃত্যু এড়াতে আমরা কী করছি ?  শুধু শরীরের চাহিদাই কি মুখ্য ? মনের চাহিদা গুলোর কি কোন মূল্য নেই ?  চিন্তার স্বাধীনতা, সুস্থ মানসিক বিকাশ, সু-শিক্ষা, আদর-স্নেহ-ভালবাসা, নৈতিকতা-মূল্যবোধ এইসব কি আমরা নিশ্চিত করতে পারি না ?

ক্ষুধা-পিপাসায় জর্জরিত হয়ে, চিকিৎসার অভাবে যেমন শরীরের মৃত্যু হয় তেমনি স্বাধীনতা-হীনতায়, সু-শিক্ষার অভাবে, দুর্নীতির অভিশাপে যখন মনের মৃত্যু ঘটবে তখন হয়ত এই দীর্ঘশ্বাস-টাই নিঃসৃত হবেঃ

 " মৃত মনের সমাধি বহনকারী জেলখানা স্বরূপ এই শরীরখানা লইয়া এখন আমি কী-ই বা করিব ! মনপাখি যে বহুকাল পূর্বেই খাঁচা ছাড়িয়া উড়িয়া গিয়াছে। "

Tuesday, February 14, 2017

বসন্ত ও ফেব্রুয়ারি

আমরা বাঙালিরা সাংস্কৃতিক দিক থেকে খুবই উদার মনের আর তাই খুব সহজেই বিদেশি সংস্কৃতি গুলোকে আপন করে নিতে পারি। ইংরেজি ফেব্রুয়ারি (February) মাসের বিশেষত্ব এখন আর শুধুই ২১ শে ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। সত্যি বলতে কি এখনকার যুবসমাজ এই দিবসটি সম্পর্কে কতটা জ্ঞান রাখে সেই বিষয়েও হয়ত অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করতে পারে। গত বছর টিভিতে দেখলাম, ২১ শে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসা এক তরুণীকে প্রশ্ন করা হয়েছিলঃ ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে কি হয়েছিল ?

তারপর আর নাই বা বললাম; বুঝতেই পারছেন যে সেই প্রশ্নের উত্তরে তরুণী এক নতুন ইতিহাস তৈরী করেছিল যা শুনলে হয়ত আমাদের ইতিহাসবিদগণ নিজেরাই ইতিহাসে পরিণত হয়ে যেতে পারেন। তবে আমাদের তরুণ সমাজ যা করেছে তা হল পুরো ১ সপ্তাহ ব্যাপী বিশ্ব ভালবাসা দিবস তথা ভালবাসা সপ্তাহ পালন। ভাবছেন, বিশ্ব ভালবাসা দিবস তো শুধু ১৪ ই ফেব্রুয়ারি তাই না ? তাহলে একনজর দেখে নিন সম্পূর্ণ ভালবাসা সপ্তাহটিকে :

Rose Day – February 7 
Propose Day – February 8
Chocolate Day – February 9
Teddy Day – February 10
Promise Day – February 11
Hug Day – February 12
Kiss Day – February 13
Valentine’s Day – February 14

ভালবাসা দিবস বলে কথা ! মাত্র ১ দিনে কি আর হয় ? আমি মনে হয় কিছুটা পুরোনো জেনারেশনের মানুষ তাই হয়ত এই দিনটির মাহাত্ম সঠিকভাবে এখনও বুঝতে পারি নাই। আমার মত আরো যারা আছেন তাদেরই বলছি, চলুন ভালবাসা সপ্তাহ সম্পর্কে একটু বিচার বিশ্লেষণ করে দেখা যাক। 

প্রথমেই আসা যাক Rose Day (February 7) এর কথায়। এই দিন প্রেমিক-প্রেমিকা পরস্পর লাল গোলাপ বিনিময় করে নিজেদের ভালবাসার প্রকাশ ঘটায়। যদিও এই কাজটি এখন একতরফা ভাবে শুধু প্রেমিকগণই করে থাকে। লাল গোলাপকে মনে করা হয় ভালবাসার প্রতীক (যেমনঃ সাদা গোলাপ শান্তির প্রতীক, হলুদ গোলাপ মিত্রতার প্রতীক)। ইংরেজি 'Rose' এর বর্ণ গুলোকে বিন্যাস করলে একটি হয় 'Erose' আর গ্রীক মিথ অনুযায়ী ইরোস হচ্ছে প্রেমের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। আর ভালবাসা সপ্তাহের শুরুতেই এই দেবীকে খুশি করার প্রয়াস করা হয়ে থাকে। 

Rose Day দিয়ে ভালবাসা সপ্তাহ শুরু হবার পরদিনই হচ্ছে Propose Day (February 8) অর্থাৎ, লাল গোলাপ দেয়ার পর সঙ্গত কারনেই প্রেম নিবেদন করার বিষয়টি চলে আসে আর তাই এই দিনটির অবতারনা করা হয়। 

Propose Day এর পর (প্রেম নিবেদনে সফল হওয়ার পর) Chocolate Day (February 9), এই দিনে সম্ভবত প্রেমিক-প্রেমিকাগণ একটু মিষ্টিমুখ করে। তাছাড়া এই যুগের তরুণীরা যেহেতু চকলেট খুব পছন্দ করে (তাই হয়ত ইদানিং চকলেট ফ্লেভারের প্রচলন বেশি) তাই মিষ্টিমুখ করার জন্য চকলেটই সবথেকে বেশি মানানসই। 

মিষ্টিমুখ তো করা হয়ে গেল, মিষ্টিমুখ করলে একটা গিফট তো দিতেই হয়; তাই Teddy Day (February 10) এর প্রচলন। কেননা, রমণীদের কাছে Teddy Bear (এক প্রকার খেলনা ভালুক) খুবই প্রিয়। আমার কথা বিশ্বাস না হইলে একটা ভালুক কিনা কোন রমণীকে উপহার দিয়াই দেখেন !

অনেক কিছুই তো হইল, এইবার একটা কমিটমেন্ট দরকার। Promise Day (February 11) তে সেই প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ হয়। 

এরপর আসে Hug Day (February 12), প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবার পর সেটাকে আরও জোরদার করার প্রয়াস আর কি !

তারপর হচ্ছে Kiss Day (February 13), এর সম্পর্কে আর আলাদা ভাবে বলার কিছুই নেই; নাম দেখেই বুঝতে পারছেন। পাশাপাশি আবার এই দিন হচ্ছে বসন্তের প্রথম দিন অর্থাৎ ১লা ফাল্গুন। তরুণ-তরুণীরা হলুদ পোশাকে বসন্ত উৎসবও এই দিনেই পালন করে থাকে। 

কেউ একজন বলেছিলেন এইদিন হচ্ছে তাদের হলুদ সন্ধ্যা আর পরদিন (১৪ই ফেব্রুয়ারী) তাদের বিয়ে। আমাদের তরুণ-তরুণীরা আবার যে কোন দিবসকেই তাদের প্রেমের জন্য উপযুক্ত দিন হিসেবে ঠিক করে নিতে সিদ্ধহস্ত। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে যে কোন দিবস কিংবা রজনী সবই তাদের প্রেমের জন্য উপযুক্ত অর্থাৎ, সবই ভালবাসা দিবস (কিংবা রজনী)।

যাইহোক, এতক্ষন পর্যন্ত যে সকল Day এর কথা বলা হয়েছে তার প্রচলন মূলত ভারতীয় উপমহাদেশেই বেশি এবং এগুলোর ঐতিহাসিক তেমন কোনো মর্যাদা নেই; তবে Valentine’s Day (February 14) প্রায় সারা বিশ্বেই একযোগে পালন করতে দেখা যায়। এই দিন মূলত প্রিয়জনদের উপহার হিসেবে valentine card দেয়া হয়। 

এই দিনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়: সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নাম অনুসারে এ দিনের নামকরন তবে ক্যাথলিক চার্চ অনুযায়ী কমপক্ষে তিনজন সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নাম পাওয়া যায়। 

শুরুতেই বলতে হয় প্রায় সাড়ে সতেরশো বছর পূর্বের একজন রোমান ক্যাথলিক ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের কথা। ২৭০ সালের তখনকার দিনে ইটালীর রোমে শাসন করতেন রাজা ক্লডিয়াস-২, যিনি মোটেই ভাল শাসক ছিলেন না। সাধারন জনগন তাকে চাইত না। রাজা তার সুশাসন ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে রাজ দরবারে তরুন যুবকদের নিয়োগ দিলেন। আর যুবকদের দায়িত্বশীল ও সাহসী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি রাজ্যে যুবকদের বিয়ে নিষিদ্ধ করলেন। কারন, রাজা বিশ্বাস করতেন বিয়ে মানুষকে দূর্বল ও কাপুরুষ করে। বিয়ে নিষিদ্ধ করায় পুরো রাজ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হলো। এ সময় সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামক জনৈক যাজক গোপনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করলেন; তিনি পরিচিতি পেলেন 'ভালবাসার বন্ধু' বা ‘Friend of Lovers’ নামে। কিন্তু তাকে রাজার নির্দেশ অমান্য করার কারনে রাষ্ট্রদ্রোহিতার দায়ে আটক করা হল। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন কারারুদ্ধ হওয়ার পর প্রেমাসক্ত যুবক-যুবতীদের অনেকেই প্রতিদিন তাকে কারাগারে দেখতে আসত এবং ফুল উপহার দিত। তারা বিভিন্ন উদ্দীপনামূলক কথা বলে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে উদ্দীপ্ত রাখত। জেলে থাকাকালীন ভ্যালেন্টাইনের পরিচয় হয় জেল রক্ষক আস্ট্রেরিয়াসের সাথে। আস্ট্রেরিয়াস জানতো ভ্যালেন্টাইনের আধ্যাত্মিক ক্ষমতা সম্পর্কে। তিনি তাকে অনুরোধ করেন তার অন্ধ মেয়ের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে। ভ্যালেন্টাইন পরবর্তীতে মেয়েটির দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেন। এতে মেয়েটির সাথে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। অনেকক্ষণ ধরে তারা দু’জন প্রাণ খুলে কথা বলত। এভাবে এক সময় ভ্যালেন্টাইন তার প্রেমে পড়ে যায়। রাজা তার এই আধ্যাত্মিকতার সংবাদ শুনে তাকে রাজ দরবারে ডেকে পাঠান এবং তাকে রাজকার্যে সহযোগীতার জন্য বলেন। কিন্তু ভ্যালেন্টাইন বিয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা না তোলায় সহযোগীতায় অস্বীকৃতি জানান। এতে রাজা ক্ষুদ্ধ হয়ে তার মৃত্যুদন্ড ঘোষনা করেন। মৃত্যু দন্ডের ঠিক আগের মূহুর্তে ভ্যালেন্টাইন কারারক্ষীদের কাছে একটি কলম ও কাগজ চান। তিনি মেয়েটির কাছে একটি গোপন চিঠি লিখেন এবং শেষাংশে বিদায় সম্ভাষনে লেখা হয় ‘From your Valentine’ এটি ছিলো হৃদয়বিদারক। অতঃপর ১৪ ই ফেব্রুয়াররি, ২৭০ খৃঃ ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।

রোমান ঐতিহ্য অনুসারে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে পালিত হত পৌত্তলিক রোমানদের উৎসব Lupercalia । ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ বা মধ্য ফেব্রুয়ারিতে পালিত হত এ উৎসব। নতুন জন্মের এ উৎসব নিবেদিত হত রোমান কৃষির দেবতা 'ফোনাস'র উদ্দেশ্যে । রোমান পূরোহিতদের বলা হত 'লুপারসি'। কথিত আছে রোমান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা রেমুস এবং রোমুলাস কে পাহাড়ের গুহাতে লালনপালন করে নেকড়ে বাঘ 'লুপা' সেই পবিত্র গুহাতে লুপারসিরা মধ্য ফেব্রুয়ারিতে সমবেত হতেন। সেখানে নতুন জন্মের আশীর্বাদ চেয়ে দেবতার উদ্দেশ্যে পাঠা বলি দেওয়া হত আর আত্মশুদ্ধির প্রতীক হিসেবে বলি দেওয়া হত কুকুর। পাঠার সে চামড়া রক্তে ভিজিয়ে তা দিয়ে যুবতীদের এবং শস্য ক্ষেত্রকে স্পর্শ করা হত। তাদের বিশ্বাস ছিল যে এই স্পর্শ ভূমি এবং যুবতীদেরকে আরো ফলদায়ীনি করবে। বিকেলের দিকে কুমারী যুবতিদের নাম চিরকুটে লিখে একটি পাত্রে বা বাক্সে জমা করত। অতঃপর ঐ বাক্স হতে প্রত্যেক যুবক একটি করে চিরকুট তুলত, যার হাতে যে মেয়ের নাম উঠত, সে পূর্ণবৎসর ঐ মেয়ের প্রেমে মগ্ন থাকত। আর তাকে চিঠি লিখত, এ বলে ‘প্রতিমা মাতার নামে তোমার প্রতি এ পত্র প্রেরণ করছি।’ বৎসর শেষে এ সম্পর্ক নবায়ন বা পরিবর্তন করা হতো। এ রীতিটি কয়েকজন পাদ্রীর গোচরীভূত হলে তারা একে সমূলে উৎপাটন করা অসম্ভব ভেবে শুধু নাম পাল্টে দিয়ে একে খৃষ্টান ধর্মায়ণ করে দেয় এবং ঘোষণা করে এখন থেকে এ পত্রগুলো ‘সেন্ট ভ্যালেনটাইন’-এর নামে প্রেরণ করতে হবে। কারণ এটা খৃষ্টান নিদর্শন, যাতে এটা কালক্রমে খৃষ্টান ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। ৫ম শতাব্দীতে পোপ গেলাসিয়াস ১৪ ই ফেব্রুয়ারিকে 'সেন্ট ভ্যালন্টাইন দিবস' হিসেবে ঘোষনা করেন।

তবে এটি ভালবাসার দিন হিসেবে জনপ্রিয়তা পেতে সময় লেগেছে আরো অনেক বছর। মধ্যযুগে ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্সে বিশ্বাস ছিল যে ১৪ ই ফেব্রুয়ারি থেকে সে দেশে পাখীদের প্রজনন শুরু। সে বিশ্বাস সাহায্য করেছে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভালবাসার দিন হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে । ১৪ই ফেব্রুয়ারির ভ্যালেন্টাইন দিনের সবচে পুরনো লেখা হল লন্ডনের বৃটিশ লাইব্রেরীতে রক্ষিত অর্লিয়ান্সের ডিউক, চার্লসের কবিতা। এজিনকোর্টের যুদ্ধে পরাজয়ের পর টাওয়ার অফ লন্ডনে বন্দী থাকা অবস্থায় ডিউক ১৪১৫ সালে তার প্রিয়তমা স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে লিখেন সে কবিতা। এর কয়েক বছর পর ইংল্যান্ডের রাজা হেনরী-৫ প্রেমিকা ক্যাথরিন ভালোয়ার উদ্দেশ্যে ভ্যালেন্টাইন দিবসে কবিতা লেখান লেখক জন লিন্ডগেটকে দিয়ে। এছাড়াও ১৪'শ শতকের রোমান্টিক কবিদের ভূমিকাও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। 

আমাদের দেশে ১৯৯৩ সালের পূর্বে এই দিবসের খুব একটা প্রচলন ছিল বলে ধারণা পাওয়া যায় না। এখনকার দিনের তরুণ-তরুণীরা এর ইতিহাস সম্পর্কে কতটা জানে সে বিষয়ে আমার ধারণা নেই তবে এই দিবসের ক্রমাগত বিবর্তন এবং ১ দিন থেকে ১ সপ্তাহে পরিণত হওয়া ইত্যাদি আসলে আমাদের জন্য কতটা ভাল নাকি খারাপ সে বিষয়ে এখনই আমাদের ভেবে দেখা দরকার। 

Wednesday, November 30, 2016

উপলদ্ধি ( পর্ব ৭ )


  • Sometimes, the wrong things can happen at the right time.
  • I am not afraid of dying but I'm afraid of not living my life.
  • লক্ষ্য যদি হয় সূর্যোদয়, তবে সূর্যাস্তে কেন ভয়?



Saturday, May 28, 2016

উপলদ্ধি ( পর্ব ৬ )

 আমি যখন ক্লাস ৯ এ মেয়েটা তখন ক্লাস ৭ এ নতুন ভর্তি হয় ।  আমি আবার খুব মেধাবী ছাত্র (!) ছিলাম তো তাই তেমন একটা পাত্তা দিতাম না ।  আর তাছাড়া স্কুলের সবাই আমাকে Senior ভাই হিসেবে সম্মান করত ...... তাই ওসব চিন্তা বাদ !!  কিন্তু ২ বছর পর যখন আমি ক্লাস ৯ এ ই থাকলাম আর সে চলে আসল আমাদের ক্লাসে , তখন বুঝলাম Failure is the Pillar of SUCCESS !!

 বাস স্টেশনে দাড়িয়ে থাকলে যেমন একটার পর একটা বাস আসা-যাওয়া করে কখনও বেশি দেরি হয়ে যায় আবার কখনও সময়মতই চলে আসে ।  লাইফে ঠিক তেমনি একটার পর একটা প্রেম আসে আর যায় ।  তবে সব বাসই আপনাকে আপনার গন্তব্য স্থানে পৌঁছে দেয় না , ঠিক তেমনি সব প্রেমই পূর্ণতা পায় না ।

বি. দ্র. :  উপরোক্ত কথাগুল বিভিন্ন সময় বিশেষ কিছু মানুষের থেকে শুনেছিলাম আর বাকিটা আমার কল্পনার মিশেল ।

Monday, February 29, 2016

উপলদ্ধি ( ৫ম পর্ব )

পার্থিব জীবনের সংকটময় মুহূর্তে ধৈর্য ধারণ করা কষ্টকর বটে কিন্তু আমাদের মনে রাখা উচিত যে এই অবস্থা চিরস্থায়ী নয় । যখন আমরা কোন সংকটময় অবস্থার সম্মুখীন হই তখন সেই অবস্থাকে আরও চরমভাবাপন্ন করতে নতুন করে আরও কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয় । আবার যখন আমরা সেই সংকটময় অবস্থা থেকে মুক্তি লাভ করি তখন ধীরে ধীরে অন্য সকল সমস্যাও দূর হয়ে যায় ।

Sunday, January 31, 2016

Wednesday, December 30, 2015

উপলদ্ধি ( ৩য় পর্ব )

সমস্যা যতই জটিল হোক না কেন তার কোন একটা সমাধান অবশ্যই সম্ভব, তবে প্রশ্ন হল আমরা বাস্তবিক পক্ষেই সেই সমাধান চাই কি না ?
সত্য সুন্দর হলেও অনেক সময় নিষ্ঠুর হয়, আর সেই সত্যর সামনে দাঁড়াবার সাহস সবসময় সবার থাকে না ।

Wednesday, September 2, 2015

Tuesday, July 7, 2015

উপলদ্ধি ( ১ম পর্ব )

  • When you know who you are , you know your purposes .
  • জীবনটা এমনিতেই অনেক কঠিন , আর যারা নির্বোধ তাদের জন্য এটা আরও অনেক বেশি কঠিন ।