সময় সাধারণত দুই প্রকার - ভালো সময় আর খারাপ সময়।
এছাড়া
অন্য
যা
আছে
সেটি
হল অসময় / ভুল সময় ।
ভালো
সময়
রাস্তার
ফকিরকেও
রাজা
বানিয়ে
দেয়,
আর
খারাপ
সময়ে
ঘটে
ঠিক
তার
উল্টোটা।
কিন্তু
এই
দুই
প্রকার
সময়ের
মধ্যে
এক
অদ্ভুত
মেলবন্ধন
রয়েছে।
কারো
জন্য
ভালো
সময়
তো
অন্য
কারো
জন্য
সেটি
খারাপ
সময়।
আর
সে
জন্যই
বলা
হয়ে
থাকে
- কারো
পৌষ
মাস
তো
কারো
সর্বনাশ।
কখনো
কখনো
ভুল
সময়ে
সঠিক
কোন
ঘটনা
ঘটে
যায়,
আবার
কখনো
সঠিক
সময়ে
ভুল
কিছু
ঘটে
।
আমার জন্য এরকম একটি সময় ছিল ২০১৫ সালের পর থেকে।
২০১৫
সালে
আমার
অনার্স
ফাইনাল
পরীক্ষা
শেষ
হয়, আশা করা যাচ্ছিল ২০১৬ সালের শুরুতেই এর ফলাফল পাওয়া যাবে।
সবাই
অধীর
আগ্রহে
ফলাফলের
অপেক্ষা
করলেও
ততদিনে
মাস্টার্সের
ক্লাস
শুরু
হয়ে
গেছে।
অন্য
সবার
মত
আমিও
সেই
ক্লাসে
যোগ
দিয়েছি।
কিন্তু
কে
জানত
যে, সময়টা আমার জন্য মোটেও ভালো সময় ছিল না।
ফলাফল
দেয়ার
পর
দেখা
গেল
আমি
একটি
বিষয়ে
ফেল
করেছি।
ছোটবেলা
থেকে
হয়তো
খুব
ভাল
ছাত্র
ছিলাম
না, কিন্তু খারাপ ছাত্র ছিলাম এটাও কেউ বলবেনা। এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ পেয়ে স্বনামধন্য নটরডেম কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছিলাম। তারপর সেখান থেকেও এইচএসসিতে জিপিএ ফাইভ পেয়ে ভর্তি হয়েছিলাম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে, ইলেকট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ECE Department) ডিসিপ্লিনে।
হয়তো
সেই
সময়টাও
আমার
জন্য
খারাপ
সময়
ছিল।
পারিবারিক
কিছু
সমস্যার
কারণে
পরবর্তী
বছর
আবার
ভর্তি
পরীক্ষা
দেই।
থাক
সে
কথা,
সেই
খারাপ
সময়ের
গল্প
না
হয়
অন্য
কোন
দিন
বলবো।
আমি গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ।
আমার
বিভাগের
একজন
শিক্ষক
ব্যক্তিগতভাবে
আমাকে
পছন্দ
করতেন
না
(হয়তো তেলবাজ শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না তাই, যদিও আমাকে অপছন্দের কারণ বা বিষয় কোনোটিই সেসময়
জানতাম
না)
। একদিন ক্লাসে (ফাইনাল ইয়ারের) তিনি হঠাৎ আমার রোল নম্বর জিজ্ঞাসা করলেন, আমিও সরল বিশ্বাসে তার উত্তর দিয়েছিলাম। কিন্তু সেদিন ভুলেও চিন্তা করিনি যে তিনি ব্যক্তিগতভাবে আমাকে পছন্দ করতেন না এবং তার জন্য তিনি ফাইনাল ইয়ারের ফাইনাল পরীক্ষায় তার বিষয়টিতে আমাকে ফেল করিয়ে দিবেন। সব সময় সবার সাথে ভালো ব্যবহারই করতাম, কখনো কারো সাথে খারাপ আচরণ করেছি বলে মনে পড়ে না।
কিন্তু
তারপরেও
ওই
শিক্ষকের
ওই
একটি
বিষয়েই
ফেল
করা
কোনভাবেই
মেনে
নিতে
পারছিলাম
না। যদি অন্য কোন বিষয়ে ফেল করতাম অথবা খারাপ পরীক্ষা দিয়ে থাকতাম তাহলে হয়তো সহজেই বিষয়টিকে মেনে নিতে পারতাম।
শিক্ষকরা হলেন মানুষ গড়ার কারিগর, শিক্ষকতা - মহান একটি পেশা। যদিও মাঝেমধ্যে
কিছু
জানোয়ার
(পরিমল,
পরিতোষ,
পান্না
মাস্টার
ইত্যাদি)
এই
পেশায়
যোগদান
করে
এই
পেশাটিকে
কলঙ্কিত
করার
চেষ্টা
করেছে। মানুষ শিক্ষকদের সম্মানের চোখেই দেখে, যারা সেই সম্মানের জায়গাটা ধরে রাখতে পারেন তারা অবশ্যই সম্মানিত। যেহেতু আমি নিজেও বিভিন্ন কোচিং বা প্রাইভেট প্রোগ্রাম এমনকি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুদিন শিক্ষকতা করেছি। যাই
হোক,
ধরে
নিলাম
সেটি
আমার
জন্য
একটি
খারাপ
সময়
ছিল।
সেই
সময়টায় যখন আমার ক্লাসমেটরা গ্র্যাজুয়েট হিসেবে আনন্দ করছিল, বিসিএস ও অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি চাকরির জন্য আবেদন করছিল আমি তখন ডুবে ছিলাম একরাশ হতাশায়।
গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করতে পারলাম না, মাস্টার্সের ক্লাস চলমান ছিল।
সেখান
থেকেও
নিজেকে
সরিয়ে
নিলাম।
সিদ্ধান্ত
নিলাম
মাস্টার্স
করবো
না
এই
ডিপার্টমেন্টে।
আসলে
সেই
সময়টায়
কোন
কিছুই যেন ঠিকমতো হচ্ছিল না।
বারবার
মনে
হচ্ছিল
কি
ভুল
আমি
করেছিলাম?
সত্যি
কি
আমার
কোন
ভুল
ছিল? হয়তো আমার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াটাই ভালো ছিল।
শুধু
শুধু
কেনইবা
ইঞ্জিনিয়ারিং
ছেড়ে
এখানে
এসে
ভর্তি
হয়েছিলাম?
কিছু
কিছু
প্রশ্নের
উত্তর খুঁজে না
পাওয়াটা
অনেক
কষ্টদায়ক।
সেই
সময়
ধৈর্য
ধারণ
করাটাই সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জের বিষয় ছিল।
অনার্সের রেজাল্ট খুব বেশি ভালো না হলেও প্রথম বিভাগ ছিল, আমার শিক্ষা জীবনে সব পর্যায়েই আমি প্রথম বিভাগ অর্জন করেছি বলা যেতে পারে।
তারপরেও
সেই
সময়
যখন
হতাশায়
ডুবে
থাকতাম
তখন
বিজ্ঞানী
আলবার্ট
আইনস্টাইনের
কিছু
উক্তি
সবসময়
মনে
পড়তো
:
●
Everybody is a genius. But if you
judge a fish by its ability to climb a tree, it will live its whole life
believing that it is stupid.
●
A person who never made a mistake
never tried anything new.
●
Education is what remains after one
has forgotten what one has learned in school.
যাই হোক, জরিমানা দিয়ে মধ্যবর্তী বিশেষ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হলাম তারপর পাস করলাম।
কিন্তু
তাতেও
আমার
ক্লাসমেটদের
থেকে
অনেকটা
পিছিয়ে
রইলাম।
আমার
ক্লাসমেটরা গ্র্যাজুয়েট হিসেবে ৩৭ তম বিসিএস এর ফরম ফিলাপ করলেও আমাকে অবতীর্ণ প্রার্থী (Appeared) হিসেবে সেই সময় ফরম ফিলাপ করতে হয়েছিল।
যদিও
৩৭
তম
বিসিএস
প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হতে পারিনি।
২০১৬
তে
সরকারি
ব্যাংকে
ও
অন্যান্য
ক্ষেত্রে
বেশ
বড়
কয়েকটি
সার্কুলার
হয়
যা
প্রায়
সবগুলোই
(১/২ টা বাদে) আমি মিস করি।
কিন্তু সময় সবসময় একরকম থাকে না, সময়ের পালাবদল ঘটে।
খারাপ
সময়ের
পর
আবার
ভালো
সময়
আসে।
তার
পরবর্তী
বছর
আমি
আরো
ভালো
এবং
স্বনামধন্য
ডিপার্টমেন্টে
মাস্টার্স
এর
জন্য
ভর্তি
হলাম।
এর
পূর্বে
ইঞ্জিনিয়ারিং
পড়াটাও
শেষ
করেছিলাম।
আবার
পরবর্তী
বছর
ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ -তে মাস্টার্সের সুযোগও পেয়েছিলাম।
তবে
ততদিনে
আমার
মাস্টার্সের
৩য়
সেমিস্টার
চলছিলো
তাই
আরও
১
বছর
লস
দিয়ে
ভর্তি
হইনি।
তারপর বেশ
ভালো
রেজাল্ট সহ মাস্টার্স কমপ্লিট করলাম।
মাস্টার্সে
পড়াকালীন
সময়েই
৩৮
তম
বিসিএস
এর
সার্কুলার
হলো।
গ্র্যাজুয়েট
হিসেবে
প্রথম
৩৮
তম
বিসিএস এর ফরম ফিলাপ করলাম।
( পরবর্তীতে ৪০ তম
বিসিএস
দিয়েছি
এবং ৪১ তম বিসিএস এর জন্যও আবেদন করেছি।
)
যখন ৩৮ তম বিসিএস এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় তখন আমি মাস্টার্সের দ্বিতীয় সেমিস্টারে।
মাস্টার্স
এবং
বিসিএস
- এই
দুইয়ের
পড়াই
একসাথে
চালিয়েছি।
আমার
মাস্টার্স
এর
ফাইনাল
সেমিস্টারের
ফাইনাল
পরীক্ষা
(ডিফেন্স)
শেষ
হয়
২০১৮
সালের
এপ্রিল
মাসের
প্রথম
সপ্তাহে।
তারপর, ৩৮ তম বিসিএস এর লিখিত পরীক্ষার জন্য খুব কম সময়ই প্রস্তুতি নিতে পেরেছিলাম।
0 comments:
Post a Comment