সুস্থ থাকার জন্য সকালবেলা ঘুম থেকে উঠা এবং এক্সারসাইজ করা অনেকটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি মনকে ফ্রেশ রাখার জন্য কোথাও থেকে ঘুরে আসাটাও এখন একটা অভ্যাস হয়ে দাড়িয়েছে। কিন্তু অর্থ, সময় আর চাহিদা এসবের মাঝে সবসময় একটা সমতা রাখাও প্রয়োজন। তাই কম সময়ে ঘুরে আসার মত একটা জায়গা খুঁজতে গিয়ে পেলাম সাদুল্লাহপুর যা গোলাপ ফুলের গ্রাম নামেও পরিচিত।
সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নে তুরাগ নদীর তীরে এই গোলাপ গ্রাম সাদুল্লাহপুরের অবস্থান। গ্রামের সবখানে শুধু ফুলের বাগান, চাইলে সারাদিন ফুলের রাজ্যে কাটিয়ে দিতে পারেন। যত দূর চোখ যায়, শুধু লাল গোলাপের সমারোহ। মাঝে মাঝে কিছু সাদা গোলাপ, গ্লাডিওলাস, জারবেরার বাগানও চোখে পড়ে। চাইলে অনেকগুলো ফুল কিনে আনতে পারবেন। শুধু সাদুল্লাহপুর নয়, আশপাশের শ্যামপুর, কমলাপুর, বাগ্মীবাড়ি গ্রামের গোলাপের রাজ্যেও চোখ আটকে যাবে। দুপুরের পর থেকেই চাষীরা বাগানে নেমে যান গোলাপ তুলতে। গাছের সারির এক পাশ থেকে ফুল তোলা শুরু করে শেষ পর্যন্ত মুঠো ভরে ফুল তোলেন। চাষীদের ফুল তোলার দৃশ্যও বেশ উপভোগ্য।
বাসে কিংবা ইঞ্জিন চালিত নৌকা করেও সাদুল্লাহপুর যাওয়া যায়। আমার মতে নৌকা করে যাওয়াটাই ভাল, অন্যরকম একটা অনুভূতি। ঢাকা শহরের যেকোন প্রান্ত থেকে মিরপুর-১ কিংবা মাজার রোড নেমে রিকশা ঠিক করে দিয়াবাড়ি বটতলা ঘাট চলে যাবেন। বটতলা ঘাট থেকে সাহদুল্লাহপুর ঘাটের উদ্দেশ্যে ৩০ মিনিট পর পর ইঞ্জিন চালিত নৌকা ছাড়ে। সাহদুল্লাহপুর যেতে প্রায় ৪৫ মিনিট লাগবে। বাসে যেতে চাইলে কোনাবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস ছেড়ে যায়, ওখান থেকে সরাসরি আকরান বাজার। তারপর আকরান বাজার হয়ে সাদুল্লাহপুর।
আমরা যাবার সময় নৌকায় গেলেও ফেরার সময় আকরান বাজার হয়ে ফিরেছি যাতে বিরুলিয়া ব্রিজে কিছুটা সময় কাটাতে পারি। এছাড়াও আশেপাশে জমিদার বাড়ি আছে, সময় থাকলে সেখানেও ঘুরে আসতে পারেন। সন্ধ্যা অবধি থাকলে দেখতে পাবেন গোলাপের হাট, বেচা-কেনা চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। স্থানীয় অনেক হোটেলে খাবারের ব্যবস্থা আছে তবে একটু ভাল ব্যবস্থা চাইলে আকরান বাজারে তা পাবেন। সবথেকে বড় গোলাপের বাগানটা আছে শ্যামপুরে, সাদুল্লাপুর ঘাট থেকেই অটোতে যাওয়া যায় সেখানে। সবমিলিয়ে মনকে একটু প্রশান্তি দেয়ার জন্য এটি অসাধারণ জায়গা।
0 comments:
Post a Comment